0 / 0
39829/শাওয়াল/1446 , 27/এপ্রিল/2025

IMA (বেঙ্গালুরু) ও অন্যান্য কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার শর্তাবলি

প্রশ্ন: 299171

আমাদের এখানে ভারতে কিছু কোম্পানি আছে যেগুলো তাদের কোম্পানিতে মানুষের বিনিয়োগ চায়। প্রত্যেক মাসে কোম্পানি আপনাকে কিছু অর্থ দিবে। জানা যায় যে, এ কোম্পানিগুলোর হীরার ব্যবসা, স্বর্ণের ব্যবসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি ব্যবসা আছে। কিছুদিন আগে এ ধরণের একটা কোম্পানি ‘হীরা গোল্ড’-এর মালিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন ‘‌হীরা গোল্ড’ কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করেছিল তারা সবাই বিপদে আছে। বেঙ্গালুরুর IMA কোম্পানি নামে পরিচিত আরেকটি কোম্পানির ব্যাপারে খবর ছাপানো হয়েছে। কিছু আলেম বহুবার বলেছেন যে, এ ধরনের কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ মুনাফা মুক্ত। দেওবন্দের আলেমগণ গভীর অনুসন্ধানের পর আইএমএ কোম্পানিতে বিনিয়োগের ব্যাপারে গ্রীন সিগনাল দিয়েছেন। সুতরাং এ ধরণের কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করা কি ইসলামে বৈধ; নাকি নিষিদ্ধ? কুরআন-হাদীসের আলোকে স্পষ্ট করার অনুরোধ করছি।

উত্তর

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। দুরুদ ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর

নির্দিষ্ট এ কোম্পানিগুলোর অবস্থা সম্পর্কে আমাদের জানা নেই যে, তাদের আমানতদারিতা কেমন এবং লেনদেনে শরয়ি সীমারেখা তারা কতটুকু মেনে চলে।

কিন্তু সাধারণভাবে মূলধন দিয়ে মুদারাবা লেনদেন করা এবং যে সমস্ত কোম্পানি ব্যবসা করে তাদের কাছে বিনিয়োগ করা জায়েয; যদি নিম্নোক্ত শর্তাবলি পূর্ণ হয়:

১- কোম্পানি তার সম্পদগুলো বৈধ ব্যবসায় বিনিয়োগ করা। যেমন: স্বর্ণ বিক্রি করার ক্ষেত্রে; যদি নগদ অর্থে অথবা রৌপ্যের বিনিময়ে স্বর্ণ বিক্রি করা হয় তাহলে একই মজলিসে আদান-প্রদান করার শর্ত মেনে চলা হয়। আর যদি স্বর্ণ দিয়ে স্বর্ণ বিক্রি করা হয় তাহলে পরিমাণে সমান হওয়া এবং একই মজলিসে আদান-প্রদান করার শর্ত মেনে চলা হয়। আরো জানতে দেখুন (34325) নং প্রশ্নের উত্তর।

২- মূলধনের কোন গ্যারান্টি না দেয়া। ব্যবসায় ক্ষতি হলে কোম্পানি মূলধন ফিরিয়ে দিতে বাধ্য থাকবে না; কেবল যদি ঐ কোম্পানির পক্ষ থেকে সীমালঙ্ঘন বা অবহেলা হয়ে থাকে তাহলে মূলধন ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। কারণ যদি মূলধনের গ্যারান্টি দেয়া হয়, তাহলে সর্বাবস্থায় এর স্বরূপ হলো: ঋণের চুক্তি। আর এর থেকে যা মুনাফা আসবে তা সুদ বলে গণ্য হবে।

৩- লভ্যাংশ জ্ঞাত হওয়া ও উভয় পক্ষের সম্মতিপূর্ণ হওয়া। তবে এটি নির্ধারণ করতে আনুপাতিক হারে লাভ থেকে; মূলধন থেকে নয়। যেমন: একজন অংশীদার এক-তৃতীয়াংশ অথবা অর্ধেক অথবা ২০% লাভ পাবে। আর বাকি লাভ অন্য অংশীদার পাবে।

লাভ যদি হয় নির্দিষ্ট অংক কিংবা মূলধনের নির্দিষ্ট হার কিংবা অজানা ও অনির্দিষ্ট, তাহলে চুক্তি সঠিক হবে না। ফকীহরা বলেছেন যে এ অবস্থাগুলোতে অংশীদারী ব্যবসা বাতিল বলে গণ্য হবে।

ইবনুল মুনযির বলেন: আমরা যতজন আলেমের কাছ থেকে ইলম সংরক্ষণ করেছি তারা সকলে ইজমা করেছেন যে, অংশীদারী (মুদারাবায় তথা একজনের শ্রম ও অন্যজনের অর্থ) ব্যবসায় একজন অথবা উভয়জন যদি নিজের জন্য নির্দিষ্ট দিরহাম শর্ত করে তাহলে এ চুক্তি বাতিল। আমরা যাদের কাছ থেকে এ ইলম মুখস্ত করেছি তাঁরা হলেন: মালেক, শাফেয়ী, আবু ছাওর এবং রায়পন্থী আলেমগণ।”[আল-মুগনী (৫/২৩) থেকে সমাপ্ত]

মাত্বালিবু উলিন্নুহা গ্রন্থে (৩/৫১৭) এসেছে: “যদি সে বলে: আপনি এটি মুদারাবা হিসেবে গ্রহণ করুন, আপনার জন্য লাভের অংশ থাকবে অথবা লাভে অংশীদারিত্ব থাকবে অথবা লাভের কিছু থাকবে অথবা লাভে ভাগ থাকবে; তাহলে এটি শুদ্ধ হবে না। কারণ এখানে লাভ অজ্ঞাত। আর মুদারাবা জ্ঞাত পরিমাণের শর্ত ছাড়া সঠিক হয় না।”[সমাপ্ত]

উল্লেখিত শর্তাবলি পূর্ণ হলে বিনিয়োগ করা জায়েয হবে।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android
IMA (বেঙ্গালুরু) ও অন্যান্য কোম্পানিতে বিনিয়োগ করার শর্তাবলি - ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব