29

যে সকল দিনে নফল রোযা রাখা শরিয়সম্মত

প্রশ্ন: 21979

কোন দিনগুলোতে নফল রোযা রাখা শরিয়তসম্মত? অর্থাৎ একজন মানুষ মাসের কয়দিন রোযা রাখবে? মুসলিম ব্যক্তি নির্দিষ্ট করে সপ্তাহের কোন দিন রোযা রাখবে? এছাড়াও আমি ইফতার ও সেহেরীর সঠিক সময় জানতে চাই।

উত্তরের সংক্ষিপ্তসার

মুস্তাহাব রোযার মাঝে কিছু আছে সাপ্তাহিক; যেমন: সোমবার ও বৃহস্পতিবারে। আর কিছু আছে মাসিক; যেমন: প্রতি মাসের তিন দিন রোযা রাখা। আর কিছু আছে বাৎসরিক; যা নির্দিষ্ট দিনে হতে পরে, আবার নির্দিষ্ট সময় জুড়ে হতে পারে। নির্দিষ্ট দিনের উদাহরণ: আশুরার রোযা ও আরাফার রোযা। আর নির্দিষ্ট সময় জুড়ে রোযার উদাহরণ: শাওয়াল মাসের ছয় রোযা, মহররম ও শাবান মাসের যে কয়দিন সম্ভব রোযা রাখা। যাই হোক, মুসলিম বছরের নিষিদ্ধ দিনগুলো ছাড়া যে কোনো দিনে রোযা রাখতে পারে। নিষিদ্ধ দিনগুলো হলো: ঈদের দুই দিন, তাশরীকের দিনগুলো; তবে যে ব্যক্তি হজ্জের কুরবানীর পশু (হাদী) সংগ্রহ করতে পারেনি সে এই দিনগুলোতে রোযা রাখতে পারে। আর আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় রোযা হলো: একদিন রোযা রাখা ও একদিন রোযা না-রাখা, যদি ব্যক্তি এটি করতে সক্ষম হয় এবং এটি করতে গিয়ে এর চেয়ে অগ্রাধিকারপূর্ণ কোনো আমল পালনে দুর্বল হয়ে না পড়ে।

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

উত্তর

নফল রোযার বিধান আরোপে নিহিত প্রজ্ঞা

আল্লাহ তাআলার অন্যতম প্রজ্ঞা হলো তিনি বান্দাদের উপর কিছু ইবাদত ফরয করেছেন। সেই ইবাদত পালন করার পর একই ধরনেরই কিছু নফল ইবাদত তাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন, যে ইবাদতগুলোর জন্য বিপুল পরিমাণ নেকী রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মহান রবের পক্ষ থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন: “

আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য হাছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসি। যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার কর্ণ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমি তার চক্ষু হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে যা কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় চায়, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই।” [হাদীসটি বুখারী (৬৫০২) বর্ণনা করেন]

নফল রোযার প্রকারভেদ

নফল রোযা মৌলিকভাবে দুই ভাগে বিভক্ত:

সাধারণ নফল রোযা

প্রথমটি হলো: সাধারণ নফল রোযা (যা কোনো নির্দিষ্ট সময় অথবা অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত নয়)। একজন মুসলিম বছরের যে কোন দিন নফল রোযা রাখতে পারেন। তবে যে দিনগুলোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেগুলো ছাড়া। যেমন: দুই ঈদের দুই দিন। কারণ এই দুই দিনে রোযা রাখা হারাম। তাশরীকের দিনগুলো (কুরবানীর ঈদের পরের তিন দিন)। এই দিনগুলোতে রোযা রাখা হারাম। তবে হজ্জযাত্রী ব্যক্তির সঙ্গে যদি জবাই করার জন্য হাদী না থাকে, তাহলে সে রোযা রাখতে পারে। এছাড়া বিশেষভাবে কেবল জুমার দিন রোযা রাখার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। সর্বোত্তম সাধারণ নফল রোযা হলো কেউ যদি সক্ষম হয় তাহলে একদিন রোযা রাখবে, অন্য দিন রোযা ছাড়বে। হাদীসে এসেছে: “আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় নামায হলো দাউদ আলাইহিস সালামের নামায। আর সবচেয়ে প্রিয় রোযা হলো দাউদ আলাইহিস সালামের রোযা। তিনি অর্ধেক রাত ঘুমাতেন, রাতের এক-তৃতীয়াংশ কিয়াম করতেন, আবার এক-ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। একদিন তিনি রোযা রাখতেন, আর অন্যদিনে রোযা ছাড়তেন।”[বুখারী (১১৩১) ও মুসলিম (১১৫৯) বর্ণনা করেন] উত্তমতার শর্ত হলো এই রোযা যেন তাকে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কিছুর বিষয়ে দুর্বল করে না দেয়। হাদীসটির অন্য বর্ণনায় আছে: “তিনি একদিন রোযা রাখতেন, আর অন্যদিন রোযা ছাড়তেন। কিন্তু, যখন শত্রুর সম্মুখীন হতেন তখন (রণভূমি থেকে) পলায়ন করতেন না।”[হাদীসটি বুখারী (১৯৭৭) ও মুসলিম (১১৫৯) বর্ণনা করেন]

বিশেষ নফল রোযা

সাধারণতঃ সাধারণ নফল রোযার চেয়ে বিশেষ নফল রোযা উত্তম।

বিশেষ নফল রোযাকে দুইভাগে ভাগ করা যায়:

এক: কোন ব্যক্তির অবস্থার সাথে সম্পৃক্ত। যেমন: যে যুবক বিবাহ করতে পারে না। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিছু যুবক ছিলাম। আমাদের কোনো কিছু ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বললেন: “হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে। কেননা বিয়ে তার দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান হিফাযত করে। আর যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোযা রাখে। কেননা, রোযা তার যৌনতাকে দমন করবে।”[হাদীসটি বুখারী (৫০৬৬) ও মুসলিম (১৪০০) বর্ণনা করেন] কোন যুবক যদি অবিবাহিত হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে রোযা রাখার বিধান তাগিদপূর্ণ। যুবককে যৌনতার প্রতি উদ্দীপ্ত করে তোলে এমন উপাদান যত বৃদ্ধি পাবে তার জন্য রোযা রাখার বিধান ততবেশি তাগিদপূর্ণ হবে। এক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট দিন নির্ধারণ করা ব্যতিরেকে।

দুই: নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। এ ধরণের রোযার নানা প্রকার রয়েছে। কিছু আছে সাপ্তাহিক, কিছু আছে মাসিক, আর কিছু আছে বাৎসরিক।

সাপ্তাহিক রোযা হচ্ছে: সোম ও বৃহস্পতিবারে রোযা রাখা। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোম ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন।[হাদীসটি নাসাঈ (২৩২০) ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন। শাইখ আলবানী সহীহুল জামে আস-সগীর (৪৮৯৭) গ্রন্থে এ হাদিসকে সহীহ বলে গণ্য করেছেন।] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবার ও বৃহস্পতিবার রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: “এই দুই দিনে আমলগুলো জগতসমূহের রব আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। তাই আমি চাই আমার আমল যেন এমন অবস্থায় পেশ করা হয় যে আমি রোযাদার।”[হাদীসটি নাসাঈ (২৩৫৮), ইবনে মাজাহ (১৭৪০) ও আহমদ (৮১৬১) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহীহুল জামে’ (১৫৮৩) গ্রন্থে এটিকে সহীহ বলে গণ্য করেন।] সোমবার রোযার ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: “এই দিনে আমার জন্ম হয়, আর এই দিনে আমার উপর (কুরআন) অবতীর্ণ হয়।”[হাদীসটি মুসলিম (১১৬২) বর্ণনা করেন]

মাসিক রোযা হচ্ছে: প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা রাখা। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “আমার প্রিয়তম আমাকে তিনটি উপদেশ দিয়েছেন, আমি আমৃত্যু সেগুলো ছাড়ব না। এক: প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা রাখা। দুই: চাশতের নামায পড়া, তিন: বিতিরের নামায পড়ে ঘুমানো।”[হাদীসটি বুখারী (১১৭৮) ও মুসলিম (৭২১) বর্ণনা করেন] হিজরী মাসের মাঝামাঝি সময় তথা আইয়্যামে বীযে এই তিনটি রোযা রাখা মুস্তাহাব। আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন: “তুমি যদি মাসের কিছু দিন রোযা রাখতে চাও তাহলে তেরো, চৌদ্দ ও পনের তারিখ রোযা রাখো।”[হাদীসটি নাসাঈ (২৪২৪), ইবনে মাজাহ (১৭০৭) ও আহমদ (২১০) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহীহুল জামে আস-সগীর (৬৭৩) গ্রন্থে এ হাদিসকে সহিহ বলে গণ্য করেন]

আর বাৎসরিক রোযার মধ্যে কিছু হচ্ছে নির্দিষ্ট কোনদিন রোযা রাখা। আর কিছু হচ্ছে কিছুদিন জুড়ে রোযা রাখা সুন্নত।

নির্দিষ্ট দিনগুলোর মাঝে রয়েছে:

১. আশুরার দিন। এটি হচ্ছে মহররম মাসের দশ তারিখ। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমাকে আশুরার রোযার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন: “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ দিন ছাড়া অন্য কোনো দিনকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে এবং এ মাস তথা রমযান ছাড়া অন্য কোন মাসকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে রোযা রেখেছেন বলে আমার জানা নেই।”[হাদীসটি বুখারী (২০০৬) ও মুসলিম (১১৩২) বর্ণনা করেন] ইহুদিদের বিরোধিতা করার নিমিত্তে আশুরার দিনের সাথে এর আগের অথবা পরের দিন রোযা রাখা সুন্নত।

২. আরাফার দিন। এটি হচ্ছে যিলহজ্জ মাসের নয় তারিখ। যে ব্যক্তি আরাফায় অবস্থান করে না তার জন্য বিশেষভাবে এই রোযাটি রাখা মুস্তাহাব। পূর্বের উল্লিখিত তিন প্রকার রোযার মর্যাদা প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “রমযান মাসের রোযা এবং প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা রাখা সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য। আরাফার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে, এর দ্বারা তিনি পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করবেন। আর আশুরার রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তিনি (এর বিনিময়ে) পূর্বের এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করবেন।”[হাদীসটি মুসলিম (১১৬২) বর্ণনা করেন]

আর যে বিশেষ দিনগুলো জুড়ে রোযা রাখা সুন্নত সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:

শাওয়াল মাস: এর ছয় দিন রোযা রাখা সুন্নত। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখল এবং এরপর শাওয়াল মাসের ছয় দিন রোযা রাখল সে যেন সারা বছর রোযা রাখল।”[হাদীসটি মুসলিম (১১৬৪) বর্ণনা করেন।] (7859) নং প্রশ্নের উত্তর দেখুন।

মুহররম মাস: এ মাসের যতদিন সম্ভবপর হয় রোযা রাখা সুন্নত। কারণ হাদীসে আছে: “রমযানের পরে সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে আল্লাহর মাস মুহররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পরে সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের নামায।”[হাদীসটি মুসলিম (১১৬৩) বর্ণনা করেন]

শা’বান মাস : আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত বেশি রোযা রাখতেন যে আমরা বলতাম: “তিনি আর রোযা রাখা ছাড়বেন না। আর এত বেশি রোযা ছাড়তেন যে আমরা বলতাম: তিনি আর রোযা রাখবেন না। আমি রমযান মাস ছাড়া অন্য কোনো মাসে তাকে পুরো মাস রোযা রাখতে দেখিনি। আর শা’বান মাসের মতো এত বেশি রোযা অন্য কোনো মাসে রাখতে দেখিনি। তিনি পুরো শা’বান মাস রোযা রাখতেন। তিনি শা’বান মাসের অল্প কিছু দিন বাদে পুরো মাস রোযা রাখতেন।”[হাদীসটি বুখারী (১৯৬৯) ও মুসলিম (১১৫৬) বর্ণনা করেন]

নেকী প্রত্যাশী প্রত্যেক মুসলিমের উচিত আল্লাহর জন্য নফল রোযা রাখার মর্যাদা জানা। হাদীসে এসেছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি একদিন মহান আল্লাহর রাস্তায় রোযা রাখে আল্লাহর তার চেহারাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বছর দূরে সরিয়ে দেন।”[হাদীসটি নাসাঈ (২২৪৭) বর্ণনা করেন। শাইখ আলবানী সহীহু সুনানিন নাসাঈ গ্রন্থে (২১২১) এ হাদিসকে সহিহ বলে গণ্য করেন]

আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে জাহান্নাম ও এর আগুন থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া ব্যক্তিদের ও জান্নাতবাসী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেন।

সেহরী ও ইফতারের সঠিক সময়

সেহরী ও ইফতারর সঠিক সময়:

যেমনটি রোযার সংজ্ঞায় বলা হয়: ফজরের শুরু থেকে সূর্য ডুবে যাওয়া পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় এবং রোযা ভঙ্গকারী সকল কিছু থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহ তাআলা বলেন:

وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ

“আর (রাতের) কালো রেখা থেকে প্রভাতের সাদা রেখা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তোমরা পানাহার করো। তারপর (পরবর্তী) রাত আসা পর্যন্ত (পানাহার বন্ধ রেখে) রোযা পূর্ণ করো।”[সূরা বাকারা: (১৮৭)]

রোযাদার ব্যক্তি ফজর হওয়া থেকে শুরু করে সূর্য ডুবে যাওয়া পর্যন্ত রোযা ভঙ্গকারী সকল কিছু গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। ইফতারের সময়ের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “যখন এদিক থেকে রাত আসে, ঐ দিক থেকে দিন চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায় তখন রোযাদার ইফতার করবে।”[হাদীসটি বুখারী (১৮১৮) ও মুসলিম (১৮৪১) বর্ণনা করেন]

আর সেহরীর সময়ের ব্যাপারে অধিকাংশ ফকিহের মত হলো: এর সময় হলো রাতের শেষার্ধ থেকে সুবহে সাদিক হওয়া পর্যন্ত। অধিকাংশ আলেমের মতে পূর্বোক্ত আয়াতের কারণে সুবহে সাদিক তথা ফজর হওয়ার আশঙ্কা না থাকলে বিলম্বে সেহরী করা সুন্নত। এছাড়াও যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তোমরা দ্রুত ইফতার করো, আর দেরীতে সেহরী করো।”[হাদীসটি ত্বাবারানী বর্ণনা করেন আর শাইখ আলবানী সহীহুল জামে’ গ্রন্থে (৩৯৮৯) বর্ণনা করেন] আর যেহেতু সেহরীর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রোযা রাখার শক্তি অর্জন করা, আর যা ফজরের কাছাকাছি সময়ে খাওয়া হয় তা রোযা রাখতে বেশি সহায়তা করে।

আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকে তার শরীয়তের অনুসারী এবং সে অনুযায়ী আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত করেন। আর দরূদ ও সালাম আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর।

আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সূত্র

সূত্র

শাইখ মুহাম্মদ সালেহ আল-মুনাজ্জিদ

answer

সংশ্লিষ্ট প্রশ্নোত্তরসমূহ

at email

নিউজ লেটার পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

নিয়মিত আপডেট ও ওয়েবসাইটের নিত্য নতুন তথ্য পেতে ইমেইল দিয়ে সাবস্ক্রাইব করুন

phone

ইসলাম প্রশ্ন এবং উত্তর অ্যাপ্লিকেশন

কন্টেন্টে আরও দ্রুত অনুসরণ করুন এবং ইন্টারনেট ছাড়া ব্রাউজ করার সুযোগ

download iosdownload android